Wellcome to National Portal
কৃষি তথ্য সার্ভিস (এআইএস) গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকার
Text size A A A
Color C C C C

নিউটন মন্ডলের পানিকচু চারা ভারতে রপ্তানি হচ্ছে

 নিউটন মন্ডলের পানিকচু চারা ভারতে রপ্তানি হচ্ছে

কৃষিবিদ শারমিনা শামিম১ মোঃ আবদুর রহমান২
কচু, আমাদের দেশে অপ্রচলিত সবজিগুলোর একটি। একসময় এ সবজিটি বসতবাড়ির অনাবাদি পতিত জমিতে অযতেœ অবহেলায় চাষ হতো। ক্রমবর্ধমান জনসংখ্যার খাদ্য ও পুষ্টি চাহিদার বিবেচনায় বৈচিত্র্যময় ফসলের আবাদ বৃদ্ধি পাওয়ায় এ ফসলটি এখন অনেক বেশি গুরুত্বপূর্ণ হয়ে উঠেছে।
পানিকচু চাষ, চারা উৎপাদন ও বিক্রির মডেলে পরিণত হয়েছেন খুলনা জেলার ডুমুরিয়া উপজেলার ঘোনা মাদারডাঙা গ্রামের নিউটন মন্ডল। তিনি মিল শ্রমিকের কাজ ছেড়ে ২০০৮ সালে মাত্র ২০ শতাংশ জমিতে পানিকচু চাষের মাধ্যমে কৃষি কাজ করে আজ সমাজে সুপ্রতিষ্ঠিত হয়েছেন। উপজেলা কৃষি অফিসের সূত্র মতে, নিউটন ২০১৫ সালে উপজেলা কৃষি অফিসের পরমর্শ গ্রহণ করে দ্বিতীয় শস্য বহুমুখীকরণ প্রকল্পের এসএফজি হিসেবে যোগদানের মাধ্যমে কৃষক দল গঠন করেন। পরবর্তীতে নিউটন  ২০১৭-১৮ অর্থবছর হতে ৫০ শতাংশ জমি লিজ গ্রহণ করে ৪০০০টি  পানিকচু চারা রোপণ করেন। এতে তার অর্থ ব্যয় হয় ১০-১২ হাজার টাকা। এ বছর লতি, কচু ফুল ও পানিকচু বিক্রি করে তিনি ৩,৮৪,০০০/- টাকা আয় করেন, যার মধ্যে লতি ও ফুল বিক্রি করেন ২০-২৫ হাজার টাকার। নিউটন ইতোমধ্যে ১ লাখ কচুর চারা বাংলাদেশের বিভিন্ন প্রান্তে পাঠিয়েছেন এবং এ চারা সম্প্রসারণের জন্য আলাদাভাবে প্লটও তৈরি করেছেন। তার উৎপাদিত পানিকচুর চারা এখন দেশের বিভিন্ন জেলাতে বিক্রি হওয়া ছাড়াও ভারতে রপ্তানি করছেন। 
বর্তমানে তিনি থাই পেয়ারার চাষও শুরু করেছেন এবং গত অর্থবছরে ৫০ হাজার টাকার পেয়ারা বিক্রি করে এলাকায় সাড়া জাগিয়েছেন। ২০১৯ সাল হতে নিউটন তার এক সহযোগীকে নিয়ে খুলনা সাতক্ষীর মহাসড়কের বরাতিয়া গ্রামে সাড়ে ৮ বিঘা জমি লিজের মাধ্যমে এনপিএন এগ্রো নামে নার্সারি গড়ে তুলেছেন যার প্রাথমিক পুঁজি ছিল ৭ লাখ টাকার মতো। এ নার্সারিতে তিনি ভারতীয় জাতের আপেল, কমলা, রাম্বুতান, ত্বীন ফল, চুঁই এর চারা, বিভিন্ন প্রজাতির আম, লাল কাঁঠালসহ সর্বশেষ প্রযুক্তির বিভিন্ন ফল ও সবজির চারা কলম বিক্রি করেন। নিউটন মন্ডলের মতে, গত দুই বছরে তিনি ২৭ লাখ টাকার চারা/কলম বিক্রি করে অর্থনৈতিকভাবে সচ্ছলতা লাভ করছেন। এ বছর নিউটন ৪০০ শতক জমিতে পানিকচু চাষ করছেন এবং এখান থেকে ফুল, লতি ও কচু চারা ও কচু বিক্রির মাধ্যমে ৩০ লাখ টাকা আয় করবেন বলে আশা প্রকাশ করেন। এ ছাড়াও তিনি কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের কন্দাল ফসল উন্নয়ন প্রকল্পভুক্ত এলাকায় পানিকচুর চারা সরবরাহ করছেন। নিউটন খুলনা, সাতক্ষীরা, যশোর, মুন্সীগঞ্জসহ অন্যান্য এলাকায় চুঁইয়ের ক্ষেত, ত্বীন ফল, ড্রাগন বাগান তৈরি ও পানিকচু চাষে সহায়তা ও পরামর্শ প্রদান করেছেন। এ ছাড়াও তিনি কৃষিকাজের আয় দিয়ে একটি গরুর খামার ও পানের বরজ তৈরি করেছেন। পানি কচুর চাষ বৃদ্ধি করা হলে নিচু জমির সর্বোত্তম ব্যবহার এবং পুষ্টির চাহিদা পূরণে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে পাশাপাশি জৈব কৃষি প্রযুক্তির ব্যবহারে কৃষকদের আগ্রহ বাড়বে বলে আশা করা যায়।
কচুর পুষ্টিগুণাগুণ 
 কৃষিবান্ধব বর্তমান সরকারের খাদ্য ও পুষ্টি নিরাপত্তা কর্মসূচি বাস্তবায়নে কচু ফসলটি এখন অনেক বেশি সম্ভবনাময়। আগাগোড়া খাওয়া যায় এ সবজির পুষ্টিগুণ অবাক করার মতো। কচুর মূল উপাদান হলো আয়রন (ঋব), যা রক্তে হিমোগ্লোবিনের মাত্রা ঠিক রেখে শরীরে অক্সিজেনের সরবরাহ  ঠিক রাখে। প্রতি ১০০ গ্রাম কচুশাকে ৩৯ গ্রাম প্রোটিন, ৬.৮ গ্রাম শর্করা, ১৫ গ্রাম চর্বি, ২২৭ মিলিগ্রাম ক্যালসিয়াম, ১০ মিলিগ্রাম আয়রন ও  ৫৬ মিলিগ্রাম খাদ্যশক্তি থাকে। কচুর শাকে রয়েছে প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন এ,বি,সি, ক্যালসিয়াম। ভিটামিন এ জাতীয় খাদ্য রাতকানা প্রতিরোধ করে আর ভিটামিন সি শরীরের ক্ষত সারাতে সাহায্য করে। তাই শিশুদের ছোট বেলা থেকেই কচুশাক খাওয়ানো উচিত। কচুতে আছে নানা রকমের ভিটামিন যা গর্ভবতী মা ও শিশুর জন্য দারুন উপকারী। কচু দামেও বেশ সস্তা, তাই দরিদ্র্য পরিবারের গর্ভবতী মহিলারা ভিটামিন ও আয়রনের চাহিদা পূরণের জন্য কচু খেতে পারেন। কচুর ডাঁটায় প্রচুর পরিমাণে পানি থাকে, তাই গরমের সময় কচুর ডাঁটা রান্না করে খেলে শরীরের পানির ঘাটতি পূরণ হয়। কচুশাকে পর্যাপ্ত পরিমাণে আঁশ থাকে যা হজমে সহায়তা করে। জ্ব¡রের সময় রোগীকে দুধকচু রান্না করে খাওয়ালে জ্বর দ্রুত ভালো হয়। কচুতে আছে প্রচুর ফাইবার, ফোলেট ও থায়ামিন যা মানব শরীরের জন্য অনেক দরকারী উপাদান। কচু খেলে রক্তের কোলেস্টেরল কমে তাই উচ্চ রক্তচাপের রোগীদের জন্য ওল কচুর রস বেশ উপকারী। নিয়মিত কচু খেলে কোলন ক্যান্সার ও ব্রেষ্ট ক্যান্সারের ঝুঁকি কমে। কচুতে আছে অক্সলেট নামক উপাদান। তাই কচুশাক বা কচু খেলে অনেক সময় গলা চুলকায়। তাই কচু রান্না করার সময় লেবুর রস বা সিরকা ব্যবহার করা উচিত। তবে যাদের শরীরে অ্যালার্জির সমস্যা আছে তাদের কচু না খাওয়াই ভালো।
বাংলাদেশে পানি কচুর বিভিন্ন নাম রয়েছে যেমন- লতিরাজ, নারিকেল কচু, জাত কচু, বাঁশ কচু ইত্যাদি। পলি দোআঁশ ও এটেল মাটি পানিকচু চাষের জন্য উপযুক্ত। লতি লম্বায় ৯০-১০০ সেমি. সামান্য চ্যাপ্টা, সবুজ। লতি সিদ্ধ করলে সমানভাবে সিদ্ধ এবং গলা  চুলকানি মুক্ত হয়। বোঁটা ও সংযোগস্থলের উপরিভাগের রং বেগুনী। জীবনকাল ১৮০-২১০ দিন। বাংলাদেশের সব অঞ্চলেই এর চাষাবাদ করা যায়। আগাম ফসলের জন্য কার্তিক (মধ্য অক্টোবর থেকে মধ্য নভেম্বর)। নাবি ফসলের জন্য মধ্য ফাল্গুন থেকে মধ্য বৈশাখ (মার্চ-এপ্রিল) মাসে লাগানো যায়। দক্ষিণাঞ্চলে বৎসরের যে কোন সময় লাগানো যায়। প্রতি শতকে প্রায় ১৫০টি লতা রোপণ করা প্রয়োজন। জমি ভালোভাবে তৈরি করে লাইন থেকে লাইন ২ ফুট (৬০ সেমি.) এবং গাছ থেকে গাছ ১.৫ ফুট (৪৫ সেমি.) রাখতে হবে।  
কচু চাষের জন্য সারের পরিমাণ সারণি দ্রষ্টব্য। গোবর, টিএসপি এবং এমওপি সার জমি তৈরির শেষ সময়ে প্রয়োগ করতে হবে। ইউরিয়া ২-৩ কিস্তিতে প্রয়োগ করতে হয়। তবে প্রথম কিস্তি রোপণের ২০-২৫ দিনের মধ্যে প্রয়োগ করা দরকার।
আন্তঃপরিচর্যা : পানিকচুর গোড়ায় দাঁড়ানো পানি রাখতে হবে এবং দাঁড়ানো পানি মাঝে মাঝে নাড়িয়ে দিতে হবে। লতিরাজ জাতের জন্য দাঁড়ানো পানির গভীরতা ৮-১০ সেমি. হওয়া দরকার। কচুতে বালাই নিয়ন্ত্রণে সমন্বিত দমন ব্যবস্থাপনা করতে হবে। এ ছাড়াও কচুতে পাতার উপর বেগুনি থেকে বাদামি রঙয়ের গোলাকার দাগ পড়ে। পরবর্তীতে এ সমস্ত দাগ আকারে বেড়ে একত্র হয়ে যায় এবং পাতা ঝলসে যায়। পরে তা কচু ও কন্দে বিস্তার লাভ করে। উচ্চ তাপমাত্রা, আর্দ্র আবহাওয়া ও পর পর ৩-৪ দিন বৃষ্টি থাকলে এ রোগের মাত্রা খুব বেড়ে যায়। এ ক্ষেত্রে রোগ দেখা দেয়ার সাথে সাথে প্রতি লিটার পানিতে ২ গ্রাম রিডোমিল এম জেড-৭২ ডব্লিউ অথবা ডায়থে এম-৪৫ মিশিয়ে ১৫ দিন পর পর ৩ থেকে ৪ বার প্রয়োগ করতে হবে। প্রয়োগ করার আগে ট্রিকস মিশিয়ে নিতে হয়। লতি ২৫-৩০ টন/হেক্টর ও কা- ১৮-২০ টন/হেক্টর ফলন হয়ে থাকে। রোপণের ২ মাস পর থেকে ৭ মাস পর্যন্ত লতি ফসল সংগ্রহ করা হয়ে থাকে। 
 
লেখক : ১কৃষিবিদ শারমিনা শামিম, আঞ্চলিক বেতার কৃষি অফিসার, কৃষি তথ্য সার্ভিস, খুলনা। মোবা : ০১৭১৬-৭৬৮৮২১;  ২মোঃ আবদুর রহমান, এআইসিও,  কৃষি তথ্য সার্ভিস, খুলনা।   মোবা : ০১৯৪৩-৫১৭৫০৬, ই-মেইল : khulna@ais.gov.bd


COVID19 Movement Pass Online Police Clearance BD Police Help line Expatriate Cell Opinion or Complaint NIS Bangladesh Police Hot Line Number Right to Information PIMS Police Cyber Support for Women BPWN Annual Training Workshop Achievement & Success PHQ Invitation Card
Press Release Recruitment Information Procurement / Tender Notice Legal Instrument Innovation Corner Detective Magazine Bangladesh Football Club Diabetes-Covid19 Exam Results Accident Info Important Forms

Apps

icon icon icon icon icon icon